জেলা প্রতিনিধি, লালমনিরহাট।
তিস্তার উজানে ভারতের উত্তর সিকিমে তিস্তা অংশে বাধ ভেঙ্গে যাওয়ায় ভারী পানির ঢলে এবং টানা বৃষ্টিতে তিস্তায় দেখা দিয়েছে বন্যা। এতে তিস্তার দুই পাড়ের নিম্নাঞ্চল সহ চরাঞ্চল পানিতে ডুবে গেছে। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন সাধারণ মানুষ। তিস্তার পানি কমতে শুরু করায় বিভিন্ন স্থানে আশ্রয় নেওয়া মানুষগুলো ঘরে ফিরছেন।
বৃহস্পতিবার (৫ অক্টোবর) বিকেল ৩টায় দোয়ানী পয়েন্টে তিস্তার পানি বিপৎসীমার ৬৫ সে.মি. নিচে পানি প্রবাহ রেকর্ড করা হলেও কাউনিয়া পয়েন্টে ২৫ সে.মি ওপরে রেকর্ড করা হয়। এর আগে দুপুর ১২টায় ডালিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার ৬৮ সে.মি নিচে ও কাউনিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার ৩০ সে.মি. ওপরে প্রবাহিত হচ্ছে।
এদিকে তিস্তার চরাঞ্চলের ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে। গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি ও দমকা বাতাসে বিপাকে পড়েছেন বানভাসী মানুষ।
গরু -ছাগল নিয়ে ঠাঁই নিয়েছেন বন্যা আশ্রয় কেন্দ্রে কেউ বা উঁচু রাস্তায় । উৎকন্ঠায় মধ্য দিয়ে রাত পার করলেও পানি নেমে যেতে শুরু করায় কিছুটা স্বস্তি ফিরেছে। তবে বন্যা পরবর্তী ভাঙ্গণের আশংকা রয়েছেন তিস্তা পাড়ের হাজারো মানুষ।
এদিকে প্রশাসনের পক্ষ থেকে সচেতনতা প্রচারনা, সার্বিক দেখভাল করা হচ্ছে।
লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার গোবর্দ্ধন এলাকার ফজর আলী বলেন, চরে ৫ দোন জমিতে রোপা আমন ধান করছব ধান কাটার সময়ও চলে আসছে। হঠাৎ পানি আসায় সব ডুবে আছে। কতটুকু ধান থাকবে বলা মুশকিল।
একই এলাকার কৃষক আমিনুর রহমান বলেন, চরে কয়েকদিন আগে ধান কেটে রেখেছি। হালকা বৃষ্টি হয় জন্য নিয়ে আসিনাই বাড়িতে। পানি আসার খবরে কোনরকমে ভেজা ধান নিয়ে আসছি। বৃষ্টি পড়তেছে। তাই ধান মাড়াই করতেও পারছিনা।
খুনিয়াগাছ কালমাটি এলাকার মহসিন মিয়া বলেন,তিস্তার পানিতে রাস্তাঘাট তলিয়ে গিয়ে চলাচলের দুর্ভোগ সৃষ্টি হয়েছে।
আদিতমারী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ওমর ফারুক বলেন, বন্যার পানিতে চরের সবজি ক্ষেত, আলু, রোপা আপন সহ বিভিন্ন ফসল ডুবে আছে। মাঠ পর্যায়ে আমাদের লোকজন কাজ করছে। এখনো ক্ষতির পরিমান নিরুপন করা সম্ভব হয়নি।
আদিতমারী উপজেলা নির্বাহী অফিসার জি আর সারোয়ার বলেন,বন্যা দুর্গত মানুষদের খোঁজখবর নেয়া হচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের সরকারি সহযোগিতা প্রদান করা হবে। যেকোন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আমরা প্রস্তুত রয়েছি।
লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সুনীল কুমার বলেন,তিস্তার দোয়ানি পয়েন্টে পানি কমতে শুরু করায় আদিতমারী ও লালমনিরহাট সদরে বন্যার আশঙ্কামুক্ত। আমরা সার্বিক খোজখবর রাখছি।